Jagrotobibek24

তথ্য, বিনোদন, সমাজ, বিজ্ঞান ও সাহিত্য সমৃদ্ধ একটি সুন্দর ব্লগ

Sponsored by: VINNOMATRA

GoRiseMe.com

Followers

Saturday 13 February 2016

"জানতে চাই" ATN Bangla




আল কুরআন ও ঊনিশ

ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম, মৈত্রীর ধর্ম, ঐক্যের ধর্ম, পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শের ধর্ম। ইসলাম হচ্ছে নারীর অধিকার স্বীকৃতির ধর্ম, বিশ্ব-ভ্রাতৃত্বের ধর্ম, বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম, বৈপ­বিক ধর্ম। সম্পূর্ণরূপে বাস্তবভিত্তিক, পূর্ণাঙ্গ এই জীবন-বিধানে স্বভাবতঃই অতীব গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে বিজ্ঞান। এ কথা দাবী করলে আদৌ অত্যুক্তি বা অতিরঞ্জিত হবে না যে, বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞান বলতে আমরা  যা বুঝি তার প্রায় প্রতিটি শাখা ও উপশাখা সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হয়েছে ইসলামের আলোকে, মুসলমানদেরই সহযোগীতায়। অমুসলিম মনীষীবৃন্দও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় স্বীকৃতি প্রদান করেছেন যে, মূসলমানেরাই বস্তুতঃপক্ষে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক। ফলে, আমরা বিন্দুমাত্র বিস্মিত হই না যখন জানতে পারি যে, সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বস্তরের মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য সর্বশক্তিমান আল­াহ তায়ালা, তাঁর অসীম করুণায়, যে সর্বশেষ গ্রন্থ নাযেল করেছেন সেই আল-কোরাণও সম্পূর্ণরূপে এবং বিষ্ময়করভাবে বিজ্ঞানের ভিত্তিতে বিরচিত।

অমুসলিম-নিয়ন্ত্রিত ও অধুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক বিশ্বের সর্বাপেক্ষা চমকপ্রদ  আবিষ্কার, ইলেকট্রনিক কম্পিউটার, সম্প্রতি অতি সুন্দরভাবে প্রমাণ করেছে যে, পবিত্র কোরাণ এমনই জটিল গাণিতিক বুননে বিরচিত যা কোন মানুষের সৃষ্টি হতে পারে না, যার কোন পরিবর্তন সাধন করাও পার্থিব কোন শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। ১৪০০ বছর পূর্বে কোরাণ শরীফেও সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান রাব্বুল -আলামীন সূরা বনী ইসরায়েল-এ সুস্পষ্টভাবে এরশাদ করেছেন: .............
“কুল­ায়িনীজ তামা’আতিল ইনসুওয়াল জিন্নু আলা আইয়াতু বিমিসলি হাযাল কুরআনি লা ইয়াতুনা বিমিসলিহি ওয়ালাউ কা-না বা’দ্বুহুম লিবা’দ্বিন যাহীরা” (সুরা বনী ইসরাঈল, ১৭:৮৮)।

অর্থাত, “আপনি বলিয়া দিন, যদি মানুষ ও জ্বিন এই উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় যে, এইরূপ কোরাণ রচনা করিয়া আনিবে, তথাপিও উহার অনুরূপ আনয়ন করিতে পারিবে না, যদিও তাহারা একে অন্যের সাহায্যকারী হয়”।
সূরা হিজর-এও রাহমানুর রাহীম ঘোষণা করেছেন যে,
“ইন্না নাহনু নাজ্জালনাজ্ জিকরা ওয়া ইন্না লাহু লা হাফিজুন।” (সূরা হিজ্বর, ১৫:৯)
অর্থাত, “আমি কোরাণ নাযেল করিয়াছি এবং আমি তাহার রক্ষকারী”
সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান আল­াহতায়ালা কিভাবে তাঁর এই পবিত্র কালাম সংরক্ষণ করেছেন সে সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পরিবেশিত হয়ে থাকে। কোরাণ শরীফ যে আদৌ মনুষ্য-সৃষ্ট নয় তার পক্ষে বহুবিধ যুক্তি ও প্রমাণ পেশ করা হয়।
এই বিষয়ে অনেকে পবিত্র কোরাণে বিধৃত প্রাগৈতিহাসিক ঘটনাবলীর যথাযথ বর্ণনার কথা উলে­খ করে থাকেন। তাঁদের অভিমতে এ সব ঘটনাবলীর নিখুঁত বিবরণ প্রদান করা সম্ভব একমাত্র সর্বজ্ঞ আল­াহতায়ালার পক্ষেই।
কেউ কেউ উলে­খ করেন, কোরাণ মজিদের অতুলনীয় শব্দচয়নের বিষয়। তাঁদের অভিমতে, রব্বুল আলামীনের পক্ষেই শুধু সম্ভব এ ধরনের অননুকরনীয় ও অসাধারণ শব্দচয়ন।
অন্যান্যরা উলে­খ করেন পবিত্র কোরাণের অতুলনীয় ও অনুপম কাব্য-সৌন্দর্য্যের কথা। এ কাব্য-সৌন্দর্য যে সত্যিই অননুকরণীয় সে বিষয়ে সূরা তুর-এ আল­াহতায়ালা নিজেই এরশাদ করেছেন:
“আম ইয়াক্কুলূনা শাঈরুন...... আম ইয়াক্কুলূনা তাকাওয়ালাহু বাল-লা ইউমিনূন। ফাল ইয়া’তু বিহাদীসিম মিসলিহী ইন কানু সাদিকীন।”
“উহারা কি বলিতে চাহে, সে একজন কবি’?...... উহারা কি বলে, ‘এই কুরআন তাহার নিজের রচনা’? বরং উহারা অবিশ্বাসী। উহারা যদি সত্যবাদী হয় তবে ইহার সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক না?” (৫২:৩০:৩৩:৩৪)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকট্রনিক কম্পিউটার কিন্তু এ বিষয়ে সম্প্রতি সম্পূর্ণরূপে নতুন একটি তথ্য উদঘাটন করেছে। লেবাননের বিজ্ঞানী ডক্টর রাশেদ খলিফার সহায়তায় মার্কিন কম্পিউটারের কাছ থেকে জানা গেছে যে, পবিত্র আল-কোরাণ ১৯ সংখ্যার ভিত্তিতে এমন সুন্দর ও সুদৃঢ়ভাবে রচিত হয়েছে যার প্রণয়ন কোন মানুষ বা মানবগোষ্ঠির  পক্ষে লক্ষ কোটি বছরেও সম্ভব নয়।
কম্পিউটার সমর্থিত এই তথ্য সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে উপলব্ধি করতে হলে প্রথমেই জানা প্রয়োজন আল-কোরাণ কিভাবে নাযেল হয়েছিল। আমরা যে কোরাণ শরীফ অধ্যয়ন করে থাকি তাতে প্রথম সূরা হিসাবে চিহ্নিত রয়েছে সূরা আল-ফাতিহা। কিন্তু প্রথম যে সূরাটি নাযেল হয় সেটি সূরা আল ফাতিহা নয়। একইভাবে সূরা আল-বাকারাও সূরা আল-ইমরানও দ্বিতীয় বা তৃতীয় নাযেলকৃত সূরা নয়। যদিও আল-কোরাণে সে দু’টি দ্বিতীয় ও তৃতীয় সূরা হিসাবেই সন্নিবেশিত রয়েছে।
পবিত্র আল-কোরাণ নাযেল হয়েছিল সুদীর্ঘ ২৩ বছর ধরে, খন্ড খন্ড ভাবে। প্রথম বারের মত যা’ নাযেল হয় তা’হচ্ছে সূরা আল-আলাক-এর অংশ বিশেষ। এই সূরা আল-আলাক কোরাণ শরীফে ৯৬ নম্বর সূরা হিসাবে চিহ্নিত । হিরা পর্বতের গুহায় পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা স্মরণীয় সেই রাত্রিতে প্রথমবারের মত যখন হযরত মোহাম্মদ (দ:)-এর নিকনে “ওহী”  আসে তখন নাযেল হয়, এই সূরা আল-আলাক.....এরই প্রথম পাঁচটি আয়াত মাত্র। এর শুরু ছিল:

............. সূরা আলাকের ১-৫ আয়াত।
এই ওহী নাযেল হবার সংবাদ, সর্বশক্তিমান আল­াহতায়ালার পবিত্র নামে ইসলামের প্রতি আহবানের এই সংবাদ, যখন প্রথমবারের মত অমুসলিমরা জানতে পারে, তখন তা’ বিশ্বাস করা দূরের কথা, তারা অভিযোগ করে যে, হযরত মোহাম্মদ (দা:) হয়তো পাগল হয়ে গেছেন। কিংবা তাঁর উপর জ্বীন-প্রেতের “আসর” হয়েছে। কারণ তারা জানত এবং বিশ্বাস করত যে, মোহাম্মদ (দ:) হচ্ছেন আস-সাদিক, আল-ওয়াদ, আল-আমিন। তিনি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন, তিনি সত, তিনি বিশ্বাসী। তিনি অন্যায় করেন না, মিথ্যা বলেন না, মানুষকে ধাপ্পা দেন না। সুতরাং এ সব অদ্ভুত ধরনের উল্টোপাল্টা কথাবার্তা (তাদের অভিমতে) তিনি বলেছেন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার জন্যেই। প্রায় ছয় সপ্তাহ পরে জিব্রাইল (আ:) দ্বিতীয়বারের মত এলেন “ওহী” নিয়ে। এবারে নাযেল হল বর্তমানে ৬৮নং সূরা হিসাবে চিহ্নিত সূরা আল-কালাম- এর অংশ বিশেষ। এবাররে নাযেলকৃত নয়টি আয়াতের দ্বিতীয়টিতে আল­াহতায়ালা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে,
.......
অর্থাত তুমি তোমার প্রভুর অনুগ্রহে পাগল নও। (সুরা আল কালাম- ৬৮:০২)
এরপরের বারে অর্থাত তৃতীয় পর্যায়ে নাযেল হলো ৭৩ নম্বর সূরা হিসাবে চিহ্নিত সূরা  মুযযাম্মিলের অংশ বিশেষ। এ দফায় নাযেলকৃত মাত্র দশটি আয়াতের পঞ্চমটিতে আল­াহ তায়ালা ঘোষণা করলেন:
...........
অর্থাত “আমি অচিরেই তোমার প্রতি এক গুরুভার বাণী প্রেরণ করিতেছি”। (সূরা মুযযাম্মিল, ৭৩:০৫)
চতুর্থ বার যখন “ওহী” এল তখন নাযেল হল ৭৪ নম্বর সূরা হিসাবে চিহ্নিত সূরা মুদ্দাসসির-এর তিরিশটি আয়াত। এবারেও সূরাটি কিন্তু পূর্ণরূপে নাযেল হল না। পূর্বের মতই অংশ বিশেষ নাযেল হল।
এবার নাযেলকৃত ৩০টি আয়াতের মধ্যে ২৪,২৫,২৬ নম্বর আয়াতে আল­াহতায়ালা কঠোরভাবে সতর্ক করে দিলেন যে, ................
অর্থাত “অনন্তর (যে) বলিল, ইহা তো নকল করা যাদু, ইহা তো মানুষের উক্তি। অচিরেই আমি তাহাকে দোযখে দাখিল করিব। (সূরা মুদ্দাসসির, ৭৪:২৪,২৫,২৬)

সর্বশক্তিমান আল­াহতায়ালা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, যে ব্যক্তি অভিযোগ করে যে এটি অতীতের যাদু ব্যতীত কিছুই নয়, এটি শুধুমাত্র মানুষের বক্তব্য- তাকে তিনি দোযখের আগুনে অবশ্যই নিক্ষেপ করবেন।
একই সাথে ৩০ নম্বর আয়াতে নাযেল হল-
.....
অর্থাত ইহার উপরে আছে ১৯। (সূরা মুদ্দাসসির, ৭৪,৩০)।
এই “ঊনিশ” প্রকৃতপক্ষে কি? এই ১৯ দ্বারা করুণাময় রব্বুল আলামীন কি বোঝাতে চেয়েছেন? এ বিষয়ে গবেষক, তফসীরকার ও মনীষীদের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর মত বহু মনীষীই মনে করেন যে, উপরোল্লি­খিত আয়াতটিতে সেই ঊনিশজন ফেরেস্তাদের কথা উলে­খ করা হয়েছে যাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে দোযখের বাসিন্দারা। ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী মানুষের ১৯টি প্রবৃত্তি বা শক্তির উল্লে­খ করেছেন যেগুলি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে মানুষ অধ:পতনের সম্মুখীন হবে। আবদুল­াহ ইউসুফ আলী কোরাণ শরীফের বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজী তফসীর প্রদানকালে উল্লে­খ করেছেন যে, মানুষের ইন্দ্রিয় পাঁচটি, আসমানের স্তর সাতটি এবং পৃথিবীরও সাতটি স্তর। অর্থাত মোট সংখ্যা হলো ৫+৭+৭=১৯।
সুতরাং মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয় (চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্ববা ও ত্বক) অনুযায়ী যদি অধ্যাত্মীয় জগত পাঁচটি শাখায় বিভক্ত করা যায়, তাহলে তার আচার-আচরণ প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের স্তর-সংখ্যা হবে ঊনিশটি। তাঁর ভাষায়:



As there are seven heavens and a similar number of layers of the earth , man's externally perceived world has fourteen layers, and if his subjective world can be counted in five units according to his five senses, the number of stages controlling his conduct may be counted as nineteen.


তবে, ব্যাখ্যা যত প্রকারেরই হোক না কেন, ব্যাখ্যা প্রদানকারীরা সকলেই নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন যে, একমাত্র সর্বজ্ঞ আল্ল­াহতায়ালাই এর সঠিক অর্থ জানেন।
এ প্রসংগে ইলেকট্রনিক কম্পিউটার সম্পূর্ণরূপে নতুন একটি তথ্য উদঘাটন করেছে। ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের অভিমতে, এই ১৯ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা মাত্র-যার উপর ভিত্তি করে সর্বশক্তিমান আল­াহতায়ালা পবিত্র কোরাণ এ বিস্ময়কর গাণিতিক বুননে প্রণয়ন করেছেন। এই গাণিতিক বুননের মাধ্যমেই পবিত্র কোরাণ সুরক্ষিত আছে। কারণ, এই গাণিতিক বুননের কোন পরিবর্তন সাধন পার্থিব কোন শক্তির পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। ১৯ সত্যিই অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি সংখ্যা। এটি শুরু হয় সবচেয়ে ছোট সংখ্যা ১ দিয়ে শেষ হয় সবচেয়ে বড় সংখ্যা ৯ দিয়ে। এটি একটি মৌলিক সংখ্যা এবং যথেষ্ট খটমটে সংখ্যা। এর নামতা মুখস্ত রাখা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। কথিত আছে, বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ও গণিতজ্ঞ অ্যালবার্ট আইনষ্টাইন নিজেও নাকি এই ১৯ এর নামতা মুখস্ত বলতে পারতেন না। সর্বজ্ঞ আল­াহতায়ালা এই জটিল ১৯কেই গ্রহণ করেছেন কোরাণ শরীফ মারফত তাঁর অপরিসীম শক্তি প্রদর্শনের জন্য।
কোরাণ শরীফে ১৯ সংখ্যার মাধ্যমে কিভাবে আল­াহতায়ালা তাঁর সীমাহীন ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন তা’ উপলব্ধির জন্য আবার ফিরে যেতে হবে পূর্বে বর্ণিত ওহী নাযেল হওয়ার ঘটনাতে।
এটি সত্যিই বিস্ময়কর যে, চতুর্থবারের মত ওহী নাযেল হবার সময় সূরা মুদ্দাসসিরকে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। সূরা মুদ্দাসসির এর মাত্র ৩০টি আয়াত নাযেল হওয়ার পর জিব্রাইল (আ:) কিছুক্ষণ নীরব থাকেন। তারপর পূনরায় ফিরে যান সেই প্রথম সূরাটিতে। নাযেল হয় সূরা আল-আলাকের অবশিষ্ট ১৪টি আয়াত। এই প্রথমবারের মত সম্পূর্ণ হলো একটি সূরা আল-আলাক।
অর্থাত ........ আয়াতটি নাযেল হওয়ার অব্যবহিত পরই সেই সূরাটি সম্পূর্ণ করা হল যেটির আয়াত সংখ্যা হচ্ছে ১৪+৫=১৯। শুধুমাত্র তাই নয়, যে সূরাটি সম্পূর্ণ করা হলো সেই আল আলাক সূরার প্রথম পাঁচটি আয়াতের (যে আয়াতগুলি প্রথম ওহীর সাথে নাযেল হয়েছিল) শব্দসমূহের মোট সংখ্যাও ১৯টি।
উপরন্তু, ঐ পাঁচটি আয়াতের অক্ষর সংখ্যাও হলো ৭৬টি অর্থাত ৪*১৯টি। সূরা আল-আলাক এর মোট অক্ষর সংখ্যাও হলো ২৮৫টি, অর্থাত ১৯*১৫টি। সোবহান আল­াহ।

শুধু তাই নয়, পবিত্র কোরাণ শরীফের মোট সূরার সংখ্যা হচ্ছে ১১৪টি অর্থাত ৬*১৯টি। প্রথম নাযেলকৃত সূরাটি এখন ৯৬ নম্বর সূরা হিসাবে কোরাণ শরীফে চিহ্নিত। আমরা যদি কোরাণ শরীফের শেষ থেকে গুনতে শুরু করি অর্থাত ১১৪ এর পর ১১৩, ১১৩ এর পর ১১২, ১১২-এর পর ১১১ ইত্যাদি) তাহলে দেখতে পাব যে, সূরা আল আলাক হচ্ছে ১৯তম সূরা। সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে “আলায়হা তিসআতা আশার” এর উপরে আছে ঊনিশ।
আরও একটু নিবিড়ভাবে বিশে­ষন করলে আমরা দেখতে পাব যে, প্রথমে যে, আয়াতসমূহ নাযেল হয় তার মোট শব্দ সংখ্যা হচ্ছে ১৯, অর্থাত ১৯*১। দ্বিতীয় ওহী’র সংগে যে নয়টি আয়াত নাযেল হয় সেগুলির শব্দ সংখ্যা ৩৮ অর্থাত ১৯*২ বার। তৃতীয়বারে নাযেল হয় যে দশটি আয়াত তার শব্দ সংখ্যা ৫৭টি = ৩*১৯। চতুর্থবারে ........ মারফত জানিয়ে দেওয়া হল ১৯ এর অস্তিত্ব ও তার অপরিসীম গুরুত্ব।
এবার বিশে­ষণ করা যাক ......... এর। শুধুমাত্র একটি সূরা ব্যতীত প্রতিটি সূরার শুরুতেই ........ ব্যবহৃত হয়েছে। কেবলমাত্র সূরা “তওবা”-র প্রারন্তেই ... ব্যবহৃত হয়নি। আমরা জানি যে, পবিত্র কোরাণে ১১৪টি সূরা বর্তমান।
যেহেতু, সূরা তওবা’র শুরুতে ...... নেই, একথা মনে হতে পারে যে, কোরাণ মজিদ ...... সর্বমোট ১১৩ বার ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা’ নয়। সূরা না’মল পড়লে গেলে আমরা দেখতে পাই যে, সূরাটির শুরুতে রয়েছে “বিসমিল­াহির রাহমানির রাহীম”। কিন্তু সেই সংগে দেখা যায় যে, সোলেমান নবী আ:) কর্তৃক শীবার রাণী বিলকিসকে লেখা চিঠির উলে­খ রয়েছে ৩০ নম্বর আয়াতে। এবং এই চিঠি শুরু হচ্ছে “বিসমিল­াহির রাহমনীর রাহিম” দিয়ে। অর্থাত কোরাণ শরীফে ‘বিসমিল­াহির রাহমানীর রাহমী’ ব্যবহৃত হয়েছে ১১৩+১=১১৪ বার, অর্থাত ১৯*৬ বার।
..................
...... এর মোট অক্ষরসমূহের সংখ্যাও ১৯টি।
আরও একটু গভীরভাবে বিশে­ষণ করলে দেখা যাবে যে, এর মূল শব্দ চারটি। সেগুলি হচ্ছে .......... এই শব্দগুলি কোরাণ শরীফে কতবার ব্যবহৃত হয়েছে তা’ গুণে দেখলে জানা হবে যে,
..    ব্যবহৃত হয়েছে     ১৯     বার     =     ১৯*১         বার
...     ব্যবহৃত হয়েছে     ২৬৯৮     বার     =     ১৯*১৪২     বার
..     ব্যবহৃত হয়েছে     ১১৪     বার     =     ১৯*৬         বার
..     ব্যবহৃত হয়েছে     ৫৭     বার     =     ১৯*৩         বার
আর একটি চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে উপরোলি­খিত ১৯ এর গুণনগুলি। সেগুলির যোগফলও ১৯ দিয়ে বিভাজ্য।
১+১৪২+৩+৬=১৫২=১৯*৮
এখানেও “আলায়হা তিসআতা আশার” ............. সোবহান আল­াহ।

এর “মুকাত্তায়াত” (...........) বিশে­ষণ করে দেখা যাবে। আরবী ভাষায় মোট ২৮টি অক্ষর আছে। এর মধ্যে ১৪টি অক্ষর বিভিন্ন সূরার শুরুতে “আদ্যাক্ষর” বা “সাংকেতিক অক্ষর” হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে বহুল পরিচিত হচ্ছে আলিফ লাম মিম, (.........)। সূরা বাকারা ছাড়াও আরও সাতটি সূরার শুরুতে আমরা এই আলিফ, লাম, মিম পাই। ছয়টি সূরার শুরুতে শুধুমাত্র আলিফ, লাম, মিম এবং অপর দু’টি সূরার শুরুতে অন্যান্য অক্ষরের সংগে সম্মিলিতভাবে আলিফ, লাম, মিম ব্যবহৃত হয়েছে।

আদ্যাক্ষর হিসাবে ব্যবহৃত এই ১৪টি অক্ষরকে “মুকাত্তয়াত” বলা হয়। এই “মুকাত্তায়াত” এর ক্ষেত্রেও সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, কোরাণ শরীফে সেগুলি ১৯ সংখ্যার ভিত্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাত এক্ষেত্রেও “আলায়হা তিসআতা আশার।”
এই ১৪টি অক্ষর মোট ১৪ ধরনের মিশ্রণে কোরাণ শরীফে মহান আল­াহতায়ালা ব্যবহার করেছেন। কখনও এককভাবে, কখনও দুই, তিন, চার কিংবা পাঁচটি অক্ষরের সমন্বয়ে। এই “মুকাত্তায়াত” গুলি ব্যবহৃত হয়েছে মোট সূরাতে ব্যবহৃত হয়েছে। ১৪+১৪+২৯=৫৭=১৯*৩।
এখানেও “আলায়হা তিসআতা আশার”-এর প্রভাব সুস্পষ্টভাবে অনুভুত হয়।
এবার .... গুলি একে একে পরীক্ষা করে দেখা যাক। প্রথমেই .. অক্ষরটি বিবেচনা করা যাক। কারণ, প্রথম যে সূরাটিতে মুকাওয়াত ব্যবহৃত হয় সেটি হচ্ছে সূরা আল-কালাম। এই সূরাটিতে .. অক্ষরটি মুকাত্তায়াত হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। সূরা আল-কালাম এ ব্যবহৃত .. অক্ষরগুলি গুণে দেখলে দেখা যাবে যে, ঐ সূরাটিতে মোট ১৩৩টি .. আছে। ১৩৩=৭*১৯।
অর্থাত এখানেও “আলায়হা তিসআতা আশার”।
এরপরে বিশে­ষন করা যাক .. অক্ষরটি। .. অক্ষরটি দিয়ে কুরআন বা কোরাণ শব্দটি লেখা হয়। এই ... অক্ষরটি মুকাত্তায়াত হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে মোট দুটি সূরাতে। সূরা কা’ফ এ এটি ব্যবহৃত হয়েছে এককভাবে এবং সূরা আশ-শুরা'তে এটি মুকাত্তায়াত হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে সম্মিলিতভাবে। হা, মিম আঈন, সিন, (....) অক্ষরগুলির সংগে।
সূরা কা’ফ-এ .. অক্ষরগুলি গুণে দেখলে দেখা যাবে যে, মোট ৫৭ বার কা’ফ অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে। ৫৭=১৯*৩।

                                       
                                   
                       
                                   
                               
                               
                               
                           
        মিম    লাম    আলিফ    মোট    মন্তব্য
১।    আল বাকারা    ২১৯৫    ৩২০২    ৪৫০২    ৯৮৯৯    ১৯*৫২১
২।    আলে ইমরান    ১২৪৯    ১৮৯২    ২৫২১         ৫৬৬২        ১৯*২৯৮
৩।    আন-কাবূত    ৩৪৪    ৫৫৪    ৭৭৪    ১৬৭২    ১৯দ্ধ৮৮
৪।    রূম    ৩১৭    ৩৯৩    ৫৪৪        ১২৫৪        ১৯*৬৬
৫।    লোকমান    ১৭৩    ২৯৭    ৩৪৭    ৮১৭    ১৯দ্ধ৪৩
৬।    সাজদা         ১৫৮    ১৫৫        ২৫৭    ৫৭০    ১৯*৩০
মোট =         ৪৪৩৬        ৬৪৯৩    ৮৯৪৫    ১৯৮৭৪        ১৯*১০৪৬

অক্ষরের নাম     সংখ্যা
আলিফ ()
লাম ()
মীম ()
সা’দ ()      ২৫২৯
১৫৩০
১১৬৪
৯৭
 মোট     ৫৩২০=১৯*২৮০

অক্ষরের নাম     সংখ্যা
কা’ফ
 হা
ইয়া
আঈন
সা’দ     ১৩৭
১৭৫
৩৪৩
১১৭
২৬
 মোট     ৭৯৮=১৯*৪২


ক্রমিক    ওয়াহইর জ্ঞান    আধুনিক বিজ্ঞান
১.     ওয়াহইর জ্ঞানের মূল উতস মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ আল­াহ তায়ালার পক্ষে থেকে।     আধুনিক বিজ্ঞানের মূল উতস অসম্পূর্ণ এবং সীমিত মানবিক জ্ঞান।
২.     ওয়াহইর জ্ঞান অদৃশ্যের প্রতি ঈমানের দাবি    আধুনিক বিজ্ঞান ধারণাসমূহের প্রতি বিশ্বাসের দাবি
৩.     ওয়াহইর জ্ঞান অখন্ডনীয় এবং সুদৃঢ় জ্ঞান    আধুনিক বিজ্ঞান ধারণাপ্রসূত এবং পরিবর্তনশীল জ্ঞান
৪.     ওয়াহইর জ্ঞান পরিপূর্ণ জ্ঞান     আধুনিক বিজ্ঞান এবং অসম্পূর্ণ জ্ঞান অপরিপূর্ণ।
৫.     ওয়াহইর জ্ঞানের মাধ্যমে বর্ণনাকৃত নিয়ম কানুন এবং বাস্তবতা কিয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনশীল    আধুনিক বিজ্ঞানের নিয়ম কানুনের মধ্যে সর্বদাই পরিবর্তনের সম্ভাবনা থেকে যায়।
৬.     ওয়াহইর জ্ঞান পার্থিব এবং আত্মিক উভয় দিকেই দিকনিদের্শনা দেয়।     আর আধুনিক জ্ঞান শুধু পার্থিব উন্নতির দিকনির্দেশনা দেয়।
৭.     ওয়াহইর জ্ঞান আল­াহ সম্পর্কে জ্ঞান এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় শিখায়।     আর আধুনিক বিজ্ঞান কোনো সময় আল­াহ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন আবার কোনো সময় আল­াহ থেকে দূরে থাকা, আবার কখনো আল­াহকে অস্বীকার করার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৮.     ওয়াহইর জ্ঞান পৃথিবীর জীবনের তুলনায় পরকালের জীবনকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।     আর আধুনিক জ্ঞান সার্বিক মনোনিবেস পৃথিবীর জীবনের দিকে যেখানে পরকালের কোনো কল্পনাই নেই।

৯.    ওয়াহইর জ্ঞানের নিয়মকানুন মানবযুক্তির অনুকুলেও হয় আবার এমনও আছে যা মানব যুক্তি অনুভব করতে অক্ষম।     আধুনিক বিজ্ঞানের সমস্ত নিয়ম কানুন মানবযুক্তির অনুকুলে হওয়া জরুরী।
১০.     ওয়াহইর জ্ঞান মানুষের ঈমান এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি করে।     আর আধুনিক বিজ্ঞান মানুষের যুক্তির পূজাকে শক্তিশালী করে।



* = গুন চিহ্ন
----- = আরবী লেখা

@@@ উপরোক্ত লেখনী এটিএন বাংলা কর্তৃক সম্পাদিত বর্তমান সময়ের বিজ্ঞান সম্মত লেখনীর "চাইতে চাই" বইটির অংশ বিশেষ। বিজ্ঞান সম্মত আধুনিক কুরাণে ১৯এর বুননসহ বিভিন্ন বিজ্ঞান সম্মত লেখনি রয়েছে। তাছাড়া ১৬০০ এর বেশি প্রশ্নসহ উত্তর রয়েছে যা সাধারণ জ্ঞান হিসাবে অনেক মূল্যবান, রয়েছে বর্তমান সময়ের নানান প্রশ্নসহ সঠিক ও সহজ উত্তর। সম্পূর্ণ বইটি পেতে বর্তমানে ২১শে বইমেলা-২০১৬ ২৮৫ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।

টাইপের কারণে উপরোক্ত লেখনির ভুল পরিলক্ষিত হলে মার্জনা করবেন।
টাইপিং অক্ষমতার কারণে আরবী লেখাগুলো সন্বিবেশন করতে না পারায় দুঃখিত।
সঠিক ও ত্রুটিমুক্ত লেখনি আরবীসহ বইটি পেতে আজই যোগাযোগ করুন-
বইয়ের নাম "জানতে চাই" (এটিএন বাংলা কর্তৃক রচিত)
০১৮৩৫-৮৪৭৭৫৫ (সম্পাদক-মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ)

No comments:

Post a Comment

International