রাস্তা চলাচলে সতর্কতা
মো: আলমগীর হোসেন
মো: আলমগীর হোসেন
মানুষকে জীবন ধারনের প্রয়োজনে রাস্তায় বের হতে হয়, পথ চলতে হয়। জীবনের চিহ্ন থাকা অবদি মানুষের পথ চলা থাকবে। আর পথ চলা যতদিন থাকবে ততদিন দূর্ঘটনাও থাকবে যদিও দূর্ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। তবুও ইদানিং দূর্ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে চলেছে এবং এর কবলে পড়ে আগণিত মানুষের মূল্যবান জীবন অকালে ঝড়ে পড়ছে। অনাকাঙ্খিত এই মৃত্যুর ফাঁদে কে কখন পড়বে তা আমরা কেউ জানি না। আর জানি না বিধায়ই প্রতিনিয়ত মৃত্যুর এই মিছিল আমাদের বেদনাহত করে, ভূক্তভোগী পরিবারকে করে নিঃস্ব। আমরা অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর অবসান চাই। তাই আসুন ধৈর্য ও সতর্কতা অবলম্বন করে নিয়ম মেনে পথ চলি। রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রীজ, আন্ডারপাস, জেব্রাক্রসিং এবং রাস্তা চলাচলে ফুটপাত ব্যবহার করা সহ নিম্নের নিয়ম সমূহ মেনে চলি।
নিয়ম সমূহ:
১. রাস্তা পারাপারের সময় প্রথমে ডানে পরে বামে এবং তারপরে আবার ডানে তাকিয়ে রাস্তা পার হোন।
২. রাস্তা পারাপারে ও গাড়ী চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
৩. রাস্তা চলাচলে হাঁটার সময়ে গাড়ী যেদিকে চলে তার উল্টোদিকে চলুন, ছোট্ট ছেলেমেয়ে সাথে থাকলে তাদের হাত ধরে রাখুন।
৪. রাস্তা পারাপারে ফুট ওভারব্রীজ, আন্ডারপাস, জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করুন।
৫. ধীরে হাঁটছেন কিংবা অসুস্থ্য-পথের মাঝ বরাবর না হেঁটে একপাশ ধরে চলুন।
৬. রিক্সায় বা গাড়ীতে যাতায়াতের সময়ে কোন কিছু ছুঁড়ে মারা থেকে বিরত থাকুন।
৭. রাস্তার পাশে দোকান থেকে কিছু ক্রয় করছেন, রাস্তা আটকে না দাঁড়িয়ে এক পাশে এমনভাবে দাঁড়ান যেন অন্য পথচারীদের চলাচলের অসুবিধা না হয়।
৮. প্রতিযোগিতা করে গাড়ী বা মোটর সাইকেল চালানো ও ওভারটেক করা থেকে বিরত থাকুন।
৯. বাসে বা গাড়ীতে হাত, মাথা যেন বাহিরে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
১০. কানে হেডফোন লাগিয়ে রাস্তা পারাপার ও গাড়ী চালানো থেকে বিরত থাকুন।
১১. বাসে সংরক্ষিত মহিলা আসনগুলো মহিলা যাত্রী আসা মাত্রা ছেড়ে দিন।
১২. যাত্রাপথে অপরিচিতি লোকের দেয়া খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
আপনি জানেন কি- রাস্তা-পারাপারে নিয়ম ভঙ্গকারী পথচারীদের ৫০/- থেকে ২০০/- আর্থিক জরিমানা ও ০৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
রাস্তা পারাপার/চলাচল নির্বিঘ্নে ও নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের করণীয়:
১. ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন।
৩. চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
৪. পর্যাপ্ত ফুট ওভার ব্রীজ, আন্ডারপাস নির্মাণ ও জেব্রাক্রসিং এর ব্যবস্থা করুন।
৫. পরিকল্পিত রাস্তা ও ফুটপাত নির্মাণ করুন।
৬. বিদ্যমান ফুটপাত, ফুটওভার বীজ ও আন্ডারপাস অবৈধ দখলমুক্ত করে ব্যবহার উপযোগী করুন।
৭. পথচারী, ড্রাইভার ও হেলপারদের সচেতন করার নিমিত্তে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী গ্রহণ করুন।
পরিশেষে বলতে চাই- উন্নত দেশ যেমন- সিঙ্গাপুর, দুবাই, কাতার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনা একেবারেই কম। এসব দেশে ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে কাউকে বাধ্য করানোর প্রয়োজন পড়ে না। আসুন আমরাও বাংলাদেশকে সভ্য দেশগুলোর কাতারে সামিল করার প্রত্যয় গ্রহণ করি। ট্রাফিক আইন মেনে চলি, নিজেকে দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করি অন্যকেও দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনযাপন নিরাপদ ও আনন্দময় করি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন- আমিন।
No comments:
Post a Comment