পৃথিবীর সুস্থ সচেতন মানুষ সকলেই বড় হতে চায়। এটা সত্য, সকলেই বড় হয় না। বড় হতে হলে প্রথমত কে বড়, কাকে বড় বলা হয়-তা জানতে হবে সবার আগে। জীবনের চলার পথে মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে। বড় হতে হলে স্বপ্ন দেখতেই হয়। বড় হবার প্রেরণা জীবন্ত সব অন্তরেই প্রোথিত। বড় হতে হলে-অন্তত জ্ঞানের জগতে-প্রথমে দেখতে হয় স্বপ্ন। তবে ঘুমের ঘরে দেখা স্বপ্ন নয়। ঘুমের স্বপ্ন তো নিদ্রাজগতের সুখ। এই জাগ্রত পৃথিবীতে ‘রাজা’ হতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে জাগ্রত বসে। প্রতিজ্ঞা করতে হবে স্বপ্নটা হাতের মুঠোয় করে দেখবার। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই ভালোবাসে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতে। এই অলসস্বপ্নের মজাই আলাদা।
ছোট ছোট ভাবনা, ছোট ছোট স্বপ্ন আর ছোট ছোট কাজের সমষ্টিই জীবন। প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি স্বপ্ন প্রভাবিত করে জীবনকে। আসলে স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। মানুষ প্রতিনিয়ত বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে। জীবনে একটা কিছু করার স্বপ্ন দেখে। এই স্বপ্নই জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন : ডাক্তার, লেখক, ব্যবসায়ী, গায়ক, নায়ক, শিক্ষক ইত্যাদি হওয়ার স্বপ্ন।
আমরা অনেকেই মনে করি স্বপ্ন মানেই একটি নিচক কল্পনামাত্র। তা নয়, স্বপ্ন মানেই বাস্তব, স্বপ্ন মানেই গন্তব্য। আমি কোথায় যেতে চাই তার নাম স্বপ্ন।
বাস্তব স্বপ্ন ও চেষ্টা কখনোই ব্যর্থ হয় না। যদি স্বপ্নকে বিশ্বাসে রূপান্তরিত করতে পারা যায় তাহলে তা অর্জনও করা যায়। আমরা সবাই সাফল্য চাই। সকলে জীবনে সেরা জিনিস পেতে চাই। কেউই সাদামাটা জীবন চাই না, হামাগুড়ি দিয়ে চলতে চাই না। সবাই বড় হতে চাই।
আমরা যদি বড় হতে চাই তাহলে প্রথমে বড়দের জানতে হবে; জানতে হবে ইতিহাসের অবিসংবাদিত অমর সম্রাটদের।
রাইট ভাত"দ্বয় স্বপ্ন দেখতেন এমন এক যন্ত্র বানাবেন যাতে করে আকাশে ওড়া সম্ভব। তারা তৈরি করলেন প্লেন। সভ্যতার চেহারাই পরিবর্তন হয়ে গেল তাদের এই আবিষ্কারের ফলে। মার্কনি স্বপ্ন দেখতেন, স্রষ্টার শক্তিকে জয় করে কাজে লাগাবেন। তিনি যে ভুল স্বপ্ন দেখেননি তার প্রমাণ বেতার ও টেলিভিশন আবিষ্কার। উল্লেখ্য যে, মার্কনি যখন দাবি করলেন তিনি তারের সাহায্য ছাড়াই বাতাসের মধ্য দিয়ে সংবাদ প্রেরণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, তখন তার বন্ধুরা তাকে মনস্তাত্ত্বিক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল।
একজন স্কুল শিক্ষক অংকে মনযোগী না হওয়ায় এবং ছোট্ট অংক করতে না পারায় এক ছাত্রকে বলেছিলেন, তুমি জীবনে কিছুই হতে পারবে না। সেই বালক পরে হয়েছিলেন মস্তবড় বিজ্ঞানী। তার নাম ‘আলবার্ট আইনস্টান’।
সৃষ্টিকর্তার কাছে সব মানুষ সমান। তাই তিনি সবাইকে বড় হওয়ার জন্য, জীবনে বড় কিছু অর্জন করার জন্য স্বপ্ন দেন। যারা তাঁর স্বপ্নটা দেখা মাত্র চিনতে পারেন এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তা করেন, তাদের জীবনেই স্বপ্ন পূরণ হয়।
আর যারা স্বপ্নটা মাঝ পথে ছেড়ে দেন, তারা সাধারণ জীবন যাপন করেন। আবার আরেক ধরণের মানুষ আছেন যারা স্বপ্ন দেখার সাহসই রাখেন না। তাদের জীবনে দুঃসময়ের শেষ থাকে না।
প্রত্যেকের হৃদয়ে স্বপ্ন উকি দেয়। সেই স্বপ্ন কথা বলে, আত্মনিমগ্ন হয়ে কান পাতলে তার কথা শোনা যায়। সে যা বলে ঠিক সে অনুযায়ী কাজ করলেই জীবনে সফল হওয়া যায়, বড় কিছু করা যায় ও বড় হওয়া যায়।
লেখক: কবি ও গবেষক
No comments:
Post a Comment